স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : গ্রীষ্ম মৌসুম, সেচ ব্যবস্থা এবং রমজান মিলিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিদ্যুৎ সংকট সামাল দিতে দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালাতে বিশেষ শিডিউল করেছে সরকার। কয়লার স্বল্পতার কারণে কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিটের মধ্যে মাত্র একটি ইউনিট আংশিক চালানো সম্ভব হবে। বাকি দুটি ইউনিট সারা বছরই বসে থাকবে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এক উপস্থাপনায় জানিয়েছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বছরের ৩৫৪ দিন চালানোর একটি শিডিউল তৈরি করা হয়েছে। এরমধ্যে গ্রীষ্ম, সেচ ও রমজানের সময় ১০৯ দিনের জন্য খানিকটা বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। বাকি ২৪৫ দিন উৎপাদন কমিয়ে আনা হবে।
তিনি জানান, বড় পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। এরমধ্যে ১২৫ মেগাওয়াট করে মোট ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র আগেই বড় পুকুরিয়াতে ছিল। এর বাইরে নতুন করে আরও একটি ২৭৫ মেগাওয়াটের তৃতীয় ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু তিনটি ইউনিটের মধ্যে প্রথম দুটি ইউনিট সারা বছরই বন্ধ থাকে। তৃতীয় ইউনিটটিও সারা বছর গড়ে অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে না।
নাম প্রকাশ না করে পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা বলেন, বড়পুকুরিয়াতে নতুন ইউনিট নির্মাণের আগেই আমরা চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছিলাম যে, এখানে কেন্দ্র নির্মাণ করলে চালানোর জন্য কয়লা পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের কথা না শুনে পিডিবি কেন্দ্রটি নির্মাণ করায় এখন বছরজুড়েই তা বসে থাকে। এখানে আমাদের কোনও দায় নেই। তিনি জানান, কেন এ ধরনের অলস বিনিয়োগ করা হলো, এ নিয়ে কারও মাথা ব্যথাও নেই।
পিডিবি’র সূত্র বলছে, আমদানি করা কয়লা দিয়ে চালানোর কোনও উদ্যোগও বড়পুকুরিয়া কেন্দ্রে ফলপ্রসূ হওয়ার নয়। বাংলাদেশে এখন জলপথে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করা হয়। কয়লার বিশাল জাহাজ দক্ষিণ থেকে উত্তরে যাওয়ার মতো নাব্য নদীতে নেই। এছাড়া বড়পুকুরিয়া পর্যন্ত কোনও রেল লাইনও নেই, তাছাড়া দেশে কখনও রেল ওয়াগনে কয়লা পরিবহন করা হয় না। ফলে এই অঞ্চলে কয়লা না পাওয়া গেলে ভবিষ্যতেও বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে এভাবেই অলস বসে থাকতে হবে।