
বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরামপুরে পরিবেশবান্ধব ইটভাটায় তৈরি হচ্ছে উন্নতমানের ইট। আধুুনিক যুগের অত্যাধুনিক মেশিনে ইটভাটাটি তৈরি। পরিবেশ দূষিত বা আবাদি ফসলের কোনো ক্ষতি হয় না। এছাড়া প্রচলিত ইটের চেয়ে এই ভাটার ইটের গুণগত মান অনেক ভালো এবং দামও কম।
বিরামপুর থেকে পশ্চিমে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে জোতবানি ইউনিয়নে এএইচ অটো ব্রিকস ইট ভাটাটি অবস্থিত। প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে। এখানে ২শ’ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান। ২০১০ সাল থেকে ভাটাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এরপর ২০২০ সাল থেকে ইট তৈরির কাজ শুরু হয়। জ্বালানি কাঠ ছাড়াই বিদ্যুৎ আর কয়লায় পুড়ানো হয় ইট। এখানে প্রায় প্রতিটি ইট তৈরির কাজ হয় মেশিনে। হাতের তেমন কাজ নেই বললেই চলে।
বর্তমান এই ইটের চাহিদা প্রচুর। বিরামপুর ছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ক্রেতারা কিনতে আসছেন।
বৃহস্পতিবার কথা হয় ইট ক্রেতা সফিউল আলমের সাথে। তিনি বলেন, বাড়ি করার কাজ শুরু করেছি। তাই ইট নিতে আসলাম, শুনলাম এটা পরিবেশবান্ধব ইট। এই ইটের মান ভালো এবং দামও নাগালের ভেতর। আমি আজ ৮ হাজার টাকা দরে ৬ হাজার ইট নিলাম, পরে আবার নেবো।
স্থানীয় কৃষক মিঠু আহমেদ বলেন, এই ভাটার পাশে আমার প্রায় ৮ বিঘা ধানের জমি আছে। তাতে ধান লাগিয়েছি, ধানের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। গত আমন ও ইরি মৌসুমে ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। এই ভাটার কাজ সম্পূর্ণ আধুুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে করছেন।
আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফ আলী। তিনি বলেন, অন্য ইটভাটার কালো বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ অনেক দূষিত হয়। তবে এই ভাটা থেকে পরিবেশ বা ফসলের কোনো ক্ষতি নেই। এছাড়াও আমাদের গ্রামে এত উন্নতমানের ভাটা নির্মাণ হয়েছে, এটা আমাদের ভাগ্য। দূর-দূরান্ত থেকে বহু লোকজন আমাদের এলাকায় আসছেন।
ভাটার শ্রমিক রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমরা এখানে ২শ’ জন শ্রমিক প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। আমরা অনেক ভালো আছি। করোনাকালেও আমাদের কাজ বন্ধ ছিল না। প্রতিদিন আমরা ৩শ’ ৫০ থেকে ৪শ’ টাকা মজুরি পেয়ে থাকি।
ভাটা মিস্ত্রি জিয়াউর রহমান বলেন, ভাটা চালু থেকে আমি এখানে কাজ করছি। এ ভাটায় পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। সম্পূর্ণ মেশিনে কাজ করা হয়। বিশেষ করে এই ইট মজবুত। এই ইট দিয়ে কাজ করতে সিমেন্ট খরচ কম হয়, আবার প্লাস্টার না করলেও চলে।
এএইচ অটো ব্রিকস কোম্পানির ম্যানেজার শাহিন ইসলাম বলেন, যতদিন যাচ্ছে ততই আমাদের ইটের চাহিদা বেড়েই চলছে।নীলফামারী, জয়পুরহাট, রংপুর ও বগুড়া থেকেও ক্রেতারা ইট নিতে আসছেন আমাদের ভাটায়। তবে বর্তমানে আমরা চাহিদা মোতাবেক ইট দিতে পারছি না।
কোম্পানির মালিক মশিউর রহমান মিরর টাইমসকে বলেন, ২০১০ সাল থেকে এই পরিবেশবান্ধব ইটভাটার নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। গত ২০২০ সাল থেকে পরিবেশবান্ধব ভাটায় ইট তৈরি শুরু হয়েছে। তবে সরকারি অনুমোদনকৃত ছাড়পত্র জোগাড় করতে প্রায় চার বছর সময় লেগেছে। এ ভাটাই ২শ’ জন শ্রমিক কাজ করছেন।