
স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : যে কোনো আবহাওয়ায় পরিবেশ বান্ধব দ্রুত সময়ে ভূট্টা, ধানসহ বিভিন্ন ফসল শুকানোর কৌশল ফ্লুডাইজড পদ্ধতি। এই মিশিনে ড্রায়িং করলে ফসলের রং ও পুষ্টি গুণাগুণ ভালো থাকে। ফসল দ্রুত শুকানোর এ মেশিনটি উদ্ভাবন করেছেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাত হোসেন সরকারের নেতৃত্বে একদল গবেষক।
মেশিনটি ১৩ মাইল গড়েয়া বাজারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আজমাইন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এর সত্বাধিকারী এম আলিম আল রাজি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বসিয়েছেন। সম্পূর্ন দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরীকৃত ড্রাইয়িং মেশিনটি দিয়ে স্বল্প সময়ে, কম খরচে ফসল শুকানো সম্ভব। বর্ষা মৌসুমে বোরো ধান বা ভুট্টা নিয়ে আর কৃষকদের দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না। এটিই দেশের প্রথম কৃত্রিম পদ্ধতিতে শষ্য শুকানোর মেশিন বলে দাবি গবেষকদের।
শুক্রবার বিকালে কৃষি গবেষনা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) উদ্যোগে দিনাজপুরের ১৩ মাইল গড়েয়া হাবিপ্রবির গবেষক দলের উদ্ভাবিত মাল্টি ক্রোপস ড্রায়ার মেশিনটি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা কাউন্সিল (বিএআরসির) চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। পরিদর্শন শেষে কৃষি গবেষনা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হাবিপ্রবির ভিআইপি কনফারেন্স রুমে গবেষক ও প্রকল্পের কর্মকতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় হাবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান তাদের সহযোগিতা করেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, কৃষি ও কৃষকের কথা চিন্তা করে সরকার কৃষিকে যান্ত্রিকীকরন ও বাণিজিকীকরনের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে ভর্তুকি এবং করোনা মহামারীতে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের এসডিজি অর্জনে কৃষক কৃষি অবদান রাখছে।
প্রফেসর ড. সাজ্জাত হোসেন বলেন, মসলা জাতীয় ফসলের ক্ষেত্রে টুকিটাকি ফাস্ট স্টেজ ড্রায়িং টেকনিক ছাড়া গ্রেইনের (ভুট্রা,ধান) জন্য আমাদের দেশে টু স্টেজ ড্রায়িং টেকনিক নিয়ে কোথাও কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমরাই প্রথম এই টেকনোলজি উদ্ভাবন করেছি। এটি পরিবেশবান্ধব, বিধায় পরিবেশে ও জীব বৈচিত্রের প্রতি এর কোনও বিরুপ প্রভাব নেই, প্রোটিন ও সঠিক পরিমাণে থাকে। বর্তমানে এই পদ্ধতিতে প্রথম স্টেজে ভুট্টা বা ধান ফ্লুডাইজড বেড ড্রায়ার ব্যবহার করে মাত্র ৪ মিনিটে ২৮ শতাংশ আদ্রতা থেকে ২০ শতাংশ আদ্রতায় নিয়ে আসা যায় এবং দ্বিতীয় স্টেজে এলএসইউ/সান ড্রাই পদ্ধতি ব্যবহার করে মাত্র ৩-৪ ঘণ্টায় ২০ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ এ নিয়ে আসা যাচ্ছে।
কেজিএফএর প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন ঢাকা শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শহীদুর রশীদ ভুইয়া, বিআরআরআইএর মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, বিএআরআই মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম, কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিভ অব ইরি বাংলাদেশ ড. হুমনাথ ভান্ডারী, এসিআই সিইও ড.এএইচ আনসারী, হাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান, প্রাণী সম্পদ বিভাগের পরিচালক ড. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।