
মিরর ডেস্ক : কবিরাজের কথায় রাতের অন্ধকারে কবরস্থান থেকে মানুষের কঙ্কাল চুরি করতেন মো. হান্নান মিয়া। চুরির পর এক সেট কঙ্কাল ওই তান্ত্রিকের কাছে বিক্রি করতেন ৩ হাজার টাকায়।
বর্জ্যপাতে নিহতের লাশের মূল্য ধরা হতো ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। এভাবে কবরস্থান থেকে মানুষের বেশ কিছু কঙ্কাল চুরি করেছেন (২৩) বছর বয়সী ওই যুবক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গত মঙ্গলবার রাতে কবর খুঁড়ে মানুষের কঙ্কাল চুরির সময় রাজধানীর পল্লবীর সেকশন-১১ এলাকায় কালশী কবরস্থান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানার পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে মানুষের তিনটি মাথার খুলি, ৮টি পায়ের হাড়, ১৩টি হাতের হাড় ও ৬টি মাজার হাড় জব্দ করা হয়।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম জানান, হান্নানের গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ি। তিনি পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনের বালুরমাঠ এলাকায় কামালের ঘরে থাকতেন। গত মঙ্গলবার রাতে কঙ্কাল চুরির সময় পল্লবীর কালশী কবরস্থানের বাউন্ডারির ভেতর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি আরও জানান, নতুন কবর তৈরির জন্য সাধারণত চার-পাঁচ বছরের পুরোনো কবরের উপরে মাটি ফেলা হয়। মাটি ফেলার সময় পুরোনো কিছু কবর থেকে মানুষের হাড় বেরিয়ে আসে। পরে সেগুলো সংগ্রহ করে এক জায়গায় রাখে আবার মাটি দেওয়ার জন্য। সেই জায়গার মাটি খুঁড়ে হান্নান এখন পর্যন্ত দুইবার কঙ্কাল চুরি করেছেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, এক কবিরাজ তার কাছ থেকে চুরি করা কঙ্কালগুলো কিনে নিতেন ৩ হাজার টাকায়। ওই কবিরাজের কথায় তিনি কবরস্থান থেকে মানুষের কঙ্কাল চুরি করতে নামেন। এখন পর্যন্ত তিনি ওই কবিরাজের কাছে এক চালান কঙ্কাল বিক্রি করেছেন। দ্বিতীয়বার চুরি করার সময় স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি।
ওই কবিরাজ কী উদ্দেশ্যে হান্নানকে দিয়ে কঙ্কাল চুরির কাজ করাতেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই তান্ত্রিক এসব কঙ্কাল দিয়ে ভুয়া তন্ত্র-মন্ত্র খেলা দেখিয়ে মানুষ ঠকানোর ব্যবসা করছেন। অভিযুক্ত কবিরাজকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে কঙ্কাল দিয়ে তিনি কী করেন তা জানা যাবে। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।