
অর্থনীতি রিপোর্ট : বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানিতে অন্য প্রতিযোগী দেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে চীন। ভিয়েতনাম হঠাৎ করে চমকে দিয়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে দ্বিতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানির মুকুটও কেড়ে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বরাবরই চীন ও ভিয়েতনামের দাপট। বর্তমানে বাংলাদেশের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি পোশাক রপ্তানি করে দেশ দুটি। তবে এবার একসঙ্গে চীন ও ভিয়েতনামকে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।
চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) বাজারটিতে বাংলাদেশ ৩শ’ ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ৩১ হাজার ৪শ’ ৫০ কোটি টাকা। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে চীন ও ভিয়েতনাম রপ্তানি করেছে যথাক্রমে ৯শ’ ১৩ ও ৮শ’ ৭ কোটি ডলারের পোশাক। এতে চীনের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর ভিয়েতনামের রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
অবশ্য বাজারটিতে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে গেছে ভারত। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ভারত ২শ’ ৩১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ হাজার ২শ’ ৩৬ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছেন। এই আমদানি গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের চেয়ে ২৫ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। তার মানে, সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ পোশাক আমদানি বাড়িয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানি তার চেয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশি পোশাকের বড় বাজার। তবে ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বাজারটিতে রপ্তানি কমে যায়। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। ইতিমধ্যে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নেও ব্যাপক অগ্রগতি হয় বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ৫শ’ ৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে। গত বছরও শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল। পরে অবশ্য করোনার থাবায় রপ্তানি নিম্নমুখী হতে থাকে। বছর শেষে ৫শ’ ২২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়।
বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম মিরর টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতেও বাংলাদেশি পোশাকের রপ্তানি সামনের মাসগুলোতে আরও বাড়বে। কারণ, কারখানাগুলোতে ক্রয়াদেশের ভালো চাপ আছে।’